Loading Now
×

অল্প চিকিৎসা জ্ঞান ও ভুল ধারণার ঝুঁকি সচেতনতা জরুরি

অল্প চিকিৎসা জ্ঞান ও ভুল ধারণার ঝুঁকি সচেতনতা জরুরি

অল্প চিকিৎসা জ্ঞান ও ভুল ধারণার ঝুঁকি: সচেতনতা জরুরি

বর্তমান যুগে প্রযুক্তি ও জ্ঞানের প্রসারের ফলে অনেকেই চিকিৎসা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা রাখেন। আবার অনেকের এর বিন্দুমাত্র ধারণাও নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, যাদের চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা আছে, তাদের মধ্যেই ক্রনিক রোগের ঝুঁকি বেশি দেখা যায়। অন্যদিকে, যারা চিকিৎসা সম্পর্কে একেবারেই কিছু জানেন না, তাদের মধ্যে ক্রনিক রোগের প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম।

কেন অল্প ধারণা থাকা মানুষদের মধ্যে ক্রনিক রোগ বেশি দেখা যায়?

এর একটি বড় কারণ হলো ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক প্রস্রাবের সংক্রমণ (UTI)। অনেকে জানেন যে এটি হলে বেশি করে পানি খাওয়া দরকার, কিন্তু তারা নিয়মিত পানি পান না করায় সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। এই সংক্রমণ বারবার হলে তা কিডনিতে ছড়িয়ে ক্রনিক কিডনি ডিজিজে পরিণত হতে পারে।

অন্যদিকে, যে ব্যক্তি চিকিৎসা সম্পর্কে একেবারেই জানেন না, তিনি সাধারণত উপসর্গ দেখলে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং তার দেওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলেন। ফলে, তাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগের ঝুঁকি কম থাকে।

চিকিৎসকের কাজ চিকিৎসকের জন্যই রাখুন

একজন চিকিৎসক ১০-১২ বছর ধরে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। অথচ, অনেকেই ইউটিউবে বা গুগলে রোগের উপসর্গ খুঁজে নিয়ে নিজেই নিজের চিকিৎসক হয়ে যান। এটি সাইবারকনড্রিয়া নামে পরিচিত, যা একধরনের মানসিক সমস্যা। এ ধরনের মানুষরা নিজের শরীর সম্পর্কে অযথা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং ভুল সিদ্ধান্ত নেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

 

একজন ইঞ্জিনিয়ারের কাজে আপনি যদি ভুল করেন, তবে শুধু একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভুল করলে আপনার জীবনই হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই নিজে নিজে চিকিৎসা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই নিরাপদ পথ।

সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নিলে ঝুঁকি বাড়ে

অনেকেই সামান্য সমস্যা হলে মনে করেন, “আরও কিছুদিন ওষুধ খেয়ে দেখি, তারপর ডাক্তার দেখাব।” কিন্তু রোগের প্রকৃত অবস্থা বোঝা চিকিৎসকের কাজ। যেমন, যদি কারও পেটে দীর্ঘদিন ধরে আলসার থাকে, তাহলে তার চিকিৎসার ধরন নির্ভর করবে এন্ডোস্কোপির রিপোর্টের উপর। কিন্তু অনেকেই পরীক্ষা না করিয়ে শুধু সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে চলেন, যা বিপজ্জনক হতে পারে।

পরবর্তীতে যখন রোগ গুরুতর হয়ে যায়, তখন চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি হয়তো বলবেন, “এতোদিন পর কেন এলেন?” তখন রোগী বলবেন, “আমি তো একজন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়েছি!” কিন্তু তিনি বলবেন না যে ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট দেখাতে বলেছিলেন, যা তিনি করেননি।

 

চিকিৎসকের পরামর্শ মানা জরুরি

যদি ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট ঘুমের সময় মেনে চলতে বলেন, তবে সেটার পেছনে একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। অনেকেই মনে করেন, “ডাক্তার তো কিছু দিল না, শুধু ঘুমাতে বললো!” অথচ, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে অনেক গুরুতর রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

  • সচেতন হোন, নিজের চিকিৎসা নিজে করবেন না
  • ইউটিউব বা গুগল দেখে চিকিৎসা করবেন না।
  • যেকোনো শারীরিক সমস্যায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হলে দেরি না করে তা করান।নিজের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবেন না।
  • সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন, সুস্থ থাকুন!

 

Share this content:

Post Comment